স্বদেশ ডেস্ক:
বিএনপি কোনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে বলে এখনো প্রত্যেকটা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীতে বাস পোড়ানো প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, গত পরশুদিন আমরা দেখলাম রাজধানীতে ৯টি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এই নাশকতার নিন্দা করেছি। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বিএনপির কোনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। বিএনপির গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে বলেই এখনো প্রত্যেকটা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। কেন নিচ্ছি? কারণ আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। অন্য কোনোভাবে আমরা সরকার পরিবর্তনের কথা চিন্তাও করি না, ভাবিও না। কারণ আমাদের দল একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধু নির্বাচন ব্যবস্থাকে নয় তারা গণতন্ত্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সেই কারণে দেখেছি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখে হয়েছে। রাতের অন্ধকারে জনগণের অধিকারকে তারা লুট করে নিয়েছে। তারপর থেকে দেখেছি, যতগুলো নির্বাচন এই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনের অধীনে হয়েছে প্রত্যেকটা নির্বাচনে তাদের পক্ষে লুট করে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ধীরে ধীরে এই নির্বাচন কমিশনের উপরে জনগণের আস্থা শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে। তার প্রমাণ পাওয়া যায় ভোটকেন্দ্রে জনগণের উপস্থিতিতে। আমরা ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে দেখলাম, এত সন্ত্রাস! এত কারচুপি! এত ভয় ভীতি প্রদর্শন করার পরও সেখানে ১৪ শতাংশ বেশি ভোট তারা দেখাতে পারেনি।
ফখরুল বলেন, কি হাস্যকর কথা! কি লজ্জার কথা! প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছে, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আমেরিকা নির্বাচন কমিশনের থেকে উন্নত। কেন? কারণ তারা পাঁচ দিনেও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারে না সেখানে আমরা পাঁচ মিনিটের ফলাফল ঘোষণা করতে পারি। আপনারা তো পারবেনই, কারণ আপনাদের ফলাফল আগে থেকেই তৈরি করা থাকে। সুতরাং আপনার সেটা ঘোষণা করে দেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের লাজলজ্জা পর্যন্ত নেই। তাদের লজ্জা-শরম যদি থাকতো তাহলে তারা অনেক আগে পদত্যাগ করে চলে যেত। তারা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ সরকারের অধীনস্থ হয়ে কাজ করছে।
বিএনপি এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই সরকার দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক নেতা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। সে বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। এই সরকার বেআইনিভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা তারেক রহমান দেশের বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য করছেন। এক লাখেরও বেশি মামলা দিয়ে আমাদের ৩৫ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এর কারণ একটাই, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে এবং ভিন্নমতকে এখানে রাখা যাবে না।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, বিএনপির জলবায়ুবিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম লিঙ্কন, হাফিজুর রহমান, পার্থ দেব মন্ডল, সাজিদ হাসান বাবু, মামুন খান, যুগ্ম সম্পাদক রিয়াদ ইকবাল, মাহাবুব মিয়া, সহ সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্বেচ্ছাসেবক দল মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসলাম, মোহাম্মদ আলী, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বাবু, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আপেল মাহমুদ প্রমুখ।